চাকরির ইন্টারভিউ : যে বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ


ভয় কে জয় করুন ?

ভয় আমাদের সব থেকে বড় শত্রু। আপনার ভেতরে অপরিসীম মেধা আর যোগ্যতা থাকা সত্তেও অহেতুক ভয় আপনার মেধার বিকাশ হতে দেয় না।এক অদৃশ্য শিকলে যেন বাধা পড়ে আপনার হাত , পা চোখ ,মুখ সব কিছু। আর এই ভয়ের অদৃশ্য শিকলের কারণেই আপনি বুঝতে পারেন উত্তর জানা থাকা সত্ত্বেও সঠিক উত্তরটি আপনার দেয়া হয়ে উঠে নি। আপনার প্রকম্পিত গলা আপনার স্বর কে নিচু করে দিয়েছে , আপনার হাত পা কে শক্ত কাঠের মতো করে দিয়েছে ফলে উত্তর জানা থাকা সত্ত্বেও আপনি পারেননি , পেরে উঠেন নি। তাই চাকরির ইন্টারভিউতে সাফল্য লাভের জন্য , আপনার স্বপ্নের চাকরিটি হাতের মুঠোয় পাবার জন্য ,সর্বপ্রথম কাজই হলো ভয়কে দূর করা। তাহলে আসুন জেনে নেই কিভাবে মন থেকে ভয় দূর করবেন ।


ইতিবাচক চিন্তা করুন

পরাজয়ের চিন্তা নয় , করুন ইতিবাচক চিন্তা। আপনি পারবেন।আপনাকে দিয়েই সম্ভব। যারা পারে তারা আপনারই মত। না পারলে কি হবে , আপনার খুব বড় ক্ষতি হয়ে যাবে কিনা-তা ভাবতে যাবেন না। নিজেকে বলুন "একবার না পারিলে দেখো শতবার , বলুন হয় আমি জিতবো না হয় আমি শিখবো"। পরাজয় বলে কিছুই নেই।জয়ী আপনি হবেনই যদি লেগে থাকেন , যদি আপনার মাঝে একাগ্রতা থাকে আর অধ্যাবসায় থাকে। তাই নেতিবাচক চিন্তা করে নিজেকে দমিয়ে দিবেন না , ভাবুন আমি পারবো , আমার দ্বারা হবে। নিজেকে বলুন আমি আমার শত ভাগ দিয়ে আসবো তারপর ও যদি পরাজয় আসে তাহলে আমি মেনে নিব এবং আমার ভুলগুলো শুধরে আবার ঝাঁপিয়ে পড়ব।এইভাবে ইতিবাচক চিন্তা করুন, আপনার ভেতরের ভয় বাসা বাধতে পারবে না ।


কয়েকবার দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিন

ভয়ের কারণে অনেক সময় আমরা শারীরিক ভাবেও দুর্বল হয়ে উঠি। শরীর শক্ত হয়ে উঠে এবং মন চঞ্চল হয়ে পড়ে। ফলে নিজেকে শান্ত রাখা একদমই সম্ভব হয়ে উঠে না। এই রকম পরিস্থিতিতে চোখ বন্ধ করে কয়েকবার দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিন। দেখবেন আপনার শরীর- মন শান্ত হয়ে এসেছে। মনের ভেতর থেকেই একটা শক্তি পাচ্ছেন যা আপনার মনের ভেতরের অহেতুক ভয়কে দূর করে দিয়েছে।

ভালভাবে প্রস্তুতি নিন

একটি ভালো প্রস্তুতি আপনার ভয়কে অনেকাংশেই দূর করে দিতে পারে। সাক্ষাৎকারে কি বলবেন , কিভাবে বলবেন তার একটি প্রস্তুতি নিন , বার বার তা অনুশীলন করুন , দেখবেন সাক্ষাৎকারের সময় ভয়টা অনেকাংশেই কমে এসেছে। অনুশীলনের ফলে আরো দেখবেন আপনি খুব সাবলীলভাবে কথা বলতে পারছেন কোনো দ্বিধা বা সংকোচ ছাড়াই। সাক্ষাৎকারের সম্ভাব্য প্রশ্নগুলো নিয়ে এই অনুশীলন করুন। যেমন আপনার সম্পর্কে জানতে চাইলে কি বলবেন , আপনার দুর্বলতার কথা জানতে চাইলে কি বলবেন ইত্যাদি প্রশ্নের একটি তালিকা করে নিজে নিজে অনুশীলন করুন। দেখবেন সাক্ষাৎকারের দিন খুবই সাবলীল ভাবেই বলতে পারছেন কোনো সংকোচ আর ভয় ছাড়াই।

ভয়কে লিখে ফেলুন

যদি কোনো ভাবেই ভয়কে ঠেকাতে না পারেন তাহলে আপনার মাথায় আশা অহেতুক ভয়গুলোকে লিখে ফেলুন। কি হবে , না হবে সব কিছু।এর পর যা লিখেছেন তা দেখুন।দেখবেন ভয়টা আস্তে আস্তে দূর হয়ে যাচ্ছে , দেখবেন আপনার মস্তিষ্ক তখন নিজেই বলে উঠছে- অহেতুক ভয়।এর পর যে কাগজটিতে লিখেছেন সেই কাগজটি ছুড়ে ফেলে দিন।আর ভাবুন , আপনার ভেতরের জমে থাকা ভয়গুলো কাগজটার সাথে সাথে ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন।

শেষ প্রস্তুতি

কিছু ভুল কাজ আমাদের মনকে অহেতুক উত্তেজিত করে তুলে।এই সকল কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে তার জন্য যা করণীয় তা হচ্ছে

  • ১৫ মিনিট আগে সাক্ষাতকার স্থানে উপস্থিত হওয়া
  • সময়মত উপস্থিত হবার জন্য হাতে এক ঘন্টা সময় রেখে রওনা দেওয়া
  • গলা শুকিয়ে আসলে পিওনের কাছ থেকে পানি খেয়ে নিতে পারেন সাক্ষাৎকার কক্ষে প্রবেশ করার পূর্বেই
  • শান্ত হয়ে বসা এবং একটি সফল সাক্ষাতকারের কথা ভাবা

ভয় আমাদের চির শত্রু , এই ভয়কে জয় করতে না পারলে তা কখনই আমাদের জয়ী হতে দিবে না। হতাশা আর ব্যর্থতার বেড়াজালে আটকে রাখবে চিরকাল।সর্বপরি আপনার ইতিবাচক বিশ্বাস আপনাকে অনেক দূর নিয়ে যাবে আপনার অহেতুক ভয়কে হারিয়ে। তাই বিশ্বাস করুন আপনি পারবেন, তাহলেই আপনি পারবেন সকল ভয়কে ছাপিয়ে জয়ী হতে।